সত্যযুগ চিঠিযুগ কলিযুগ


একটা সময় এ বঙ্গদেশে মোবাইল চালানোর মত ভাগ্যপুত্র ছিলো না। তাহারা বাহ্যিক যোগাযোগ এমনকি প্রেমিকার সাথে বার্তা আদান-প্রদান করিতো চিঠি দ্বারা। প্রেমিকাও প্রত্ত্যুত্বরে চিঠিই পাঠাইতো। সে চিঠি হাতবদল হইতো প্রত্যক্ষ উপস্থিতিতে নচেৎ নিকটাত্মীয়ের কেউ ডাকপিয়নের দায়িত্ব পালন করিত। আর যদি ভাগ্যদোষে একবার খালি অভিভাবকের হাতে পড়িয়াছে তো কপোত-কপোতীর ডানা তৎক্ষণাৎ কাটা পড়িত।

দিন বদলাইয়া যায় প্রেমের স্রোতে। আমি নাদান থাকিবার কালে দেখিয়াছি,বড় ভ্রাতা-ভগিনীরা তখন চিঠিই অধিক ব্যবহার করিত। পাছে ধনপুত্র কিংবা ধনকন্যাদের বাসায় কদাচিৎ টেলিফোন নামক তারবার্তা থাকিত।

নাবালক আর সাবালকের মাঝে যখন ঝুলিতেছি,তখন প্রেক্ষাপটও চিঠি আর মুঠোফোনের মাঝে ঝুলিতেছে। বয়সের গর্জনে প্রেম যখন অবশ্যম্ভাবী হইয়া উঠিল,ঠিক করিতে পারিলামনা কোন পন্থা অবলম্বন করিবো।

সে ধনকন্যা হইলেও আমি ধনপুত্র কিংবা ফকিন্নিপুত্র কোনোটাই ছিলাম না। মাঝামাঝি ঝুলিতেছি,তাই দুটো পন্থাই আকড়াইয়া ধরিলাম।

মুঠোফোনে পয়সা ঢুকান ততটা সহজলভ্য ছিলো না বিধায় ভাগ্যদোষেই হোক কিংবা কন্যার রগচটা বাপের দোষেই হোক,বড় বাক্য প্রেরণে চিঠিই চলিত। পাছে কন্যার পরিবার বড়ই জাউড়া,প্রযুক্তি সম্পর্কে টুকিটাকি খোঁচাইতে জানে। উপরন্তু ধনকন্যাদের সাথে সর্বদাই কিছু খাটাশ রকমের বড় ভাই,কাকা,নানী-দাদী থাকে। তাহাদের কাজ কন্যাকে সর্বদা চিতায় তুলিয়া রাখা।

প্রেমের চিঠির ক্ষেত্রে সুবিধা হইতেছে,তাহা আশঙ্কাজনক সময়ে তৎক্ষণাৎ পুড়াইয়া কিংবা ডুবাইয়া ফেলিবার যায়। অসুবিধা আরও মারাত্মক,প্রাপক ব্যতীত অন্য কারো হাতে পড়িলে লজ্জ্বায় মাথাকাটা এমনকি সত্যি সত্যিই মাথাকাটা পড়িতে পারে।

একবার প্রেমিকার চিঠির উত্তর দিয়াছিলাম। সে চিঠি তাহার ব্যাগ হইতে কিভাবে যেন খসিয়া পড়ে। অতঃপর,লজ্জ্বায় আমার মাথাকাটা গেলো। যতদিনে টের পাইলাম ততদিনে সে চিঠির ফটোকপি জনগণের মাঝে আকাশে-বাতাসে উড়িতেছে।

সত্যযুগে কপোত-কপোতীরা চোখ টিপিয়া কিংবা অঙ্গভঙ্গি করিয়াই প্রেমবার্তা পাঠাইতো। পায়রার পায়েই হউক আর কাউয়ার পায়েই হউক,চিঠি উড়িত দেশ-দেশান্তরে।

পরে আসিলো চিঠিযুগ। প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ যে পন্থায়ই হউক,শেষ যুগে যন্ত্রের পাশাপাশি আমরাও তাহার স্বাদ পাইয়াছি।
চিঠিযুগ পুরোটাই পরপারে গিয়াছে। এখন কলিযুগ চলিতেছে। মুঠোফোনে চিঠি উড়ে,মুহূর্তেই প্রেরণ হইয়া যায়। অভিভাবকের ধরিবার ক্ষমতাও নাই। কারণ,যন্ত্রের ভেতর মারাত্মক পর্যায়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বিদ্যমান।

তবে সত্যযুগ কিংবা চিঠিযুগ যাহাই হউক,কলিযুগের যুগলরা যতই আধুনিক হউক না কেনো,সাদা পৃষ্ঠা আর কলম হাতে রাতের পর রাত,দিনের পর দিন,চিঠি আাদান-প্রদানের যে উত্তেজনা আর অনুভূতি,তা তাহারা কষ্মিনকালেও পাইবে না।

বড়ই আপসোস..!!

মিসির আলির সাথে কিছুদিন

ঈদের ছুটিতে বাড়ি যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি,হঠাৎ একটা টেলিফোন কল।
মিসির আলি ফোন দিয়েছেন।
- মুয়িদ,তোমার জন্য একটা জিনিস আছে।

- কি সেটা,স্যার?

- একটা ইউনিক ব্যাপার। এই প্লটের উপরই দারুণ গল্প লিখতে পারবে। শুনবে?

কাহিনীর সংক্ষিপ্ত রূপ শুনলাম। খাসা আইডিয়া। লেখার আগে গল্পের নামও ঠিক করে ফেলেছি,"প্রত্যাবর্তন।" মিসির আলি স্যার কে অসংখ্য ধন্যবাদ জানিয়ে ফোন রাখলাম। কিছুক্ষণ বাদে আবার নিজেই ফোন দিলাম।
- স্যার,আপনি কি জানেন আমি কোন কলেজ থেকে ইন্টার পাশ করেছি?

- নাহ,জানার তো কথা না।

- হাজী মিছির আলি কলেজ।

- ভালো। কিন্তু এটা আমার নামে তো নয়। আমি হজ্জ্ব করিনি,তাই হাজীও নই।

- তা ঠিক স্যার,আর আপনার নামের মধ্যে "স" আছে। আমার কলেজের নামের মধ্যে "ছ" দেওয়া।

- মুয়িদ,ঈদের ছুটি হয়নি?

- হয়েছে। বাসায়ই যাচ্ছি,কুরবানীর ঈদ। গরু-টরু কিনতে হবে। আপনি গরু কিনেছেন স্যার?

- আমি একা মানুষ,আত্মীয় তেমন নেই। কুরবানীর প্রয়োজনও হয় না।

- স্যার,আমার সাথে চলেন। কয়দিন থাকবেন আমার সাথে।

- কি করবো গিয়ে?

- আপনার রহস্যভরা গল্প বলবেন আর গরুর কালাভুনা খাবেন।

- আমি খাওয়াদাওয়ায় আগ্রহী নই।

- আমি যথেষ্ঠ আগ্রহী। চলুন তো।

- ঠিকাছে,এখন কোনো কাজও করিনা। বেকার সময় যাচ্ছে। চলো তাহলে।

অতঃপর,স্যারকে ব্যাগে পুরে রওনা দিলাম বাসার দিকে। বারোদিন পেরিয়ে গেছে,আমাকেও মিসির আলির বারোটা উপন্যাস বলা হয়ে গেছে।

এখন ফিরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। মিসির আলি স্যারকেও ব্যাগে ঢুকিয়ে ফেলেছি। ফিরে যেতে যেতে হয়তো টুকটাক কথা হবে।

স্যার যেখানে চান,নামিয়ে দেবো। নাও দিতে পারি। আজ যা রোদ পড়েছে..!!

আমি মধ্যবিত্ত


হ্যাঁ,আমি মধ্যবিত্ত।

মধ্যবিত্ত বলেই তোমার সন্তানকে পড়িয়ে নিজের হাত-খরচা জোগাড় করি। মধ্যবিত্ত বলেই ক্রোশ পথ পায়ে হেঁটে টিউশনিতে যাই। কেননা মধ্যবিত্তের ঘরে পকেটমানি চাইতে বুকে বাঁধে।

বাদ দিলাম পকেটমানি। বয়স তো হয়েছে ভালোই। আমারও তো পরিবারকে কিছু দিতে ইচ্ছে করে। বাবার পান্জাবী,মায়ের শাড়ি টা নতুন করে দেখতে ইচ্ছে করে।

তুমি তো বড়লোক। সন্তানকে বড় বড় স্কুল-কলেজে পড়াও। তোমার এত দীনতা কেনো?

তোমারই একটা গল্প শুনবে? শোনো।

মাস চারেক আগে তোমার মেয়েকে পড়াতে বললে। তোমায় আমি চিনিনা। আমায় বললে,তোমার তেমন কিছু নেই। তোমার মেয়ে ভিকারুন্নিসার সেকেন্ড গার্ল। খুবই ব্রিলিয়ান্ট। সপ্তম শ্রেণী। হাতে তখন এস.এস.সি বা এইচ.এস.সি কোনোটারই ছাত্র নেই। টিউশনিহীনতার কারণে তোমার বাচ্চাকে পড়াতে রাজি হলাম। মাত্র চার হাজার টাকায়। তুমি এর বেশি দিতে পারবেনা। কারণ,তোমার নাকি সামর্থ্য নেই।

সাড়ে চার কিলো পায়ে হেঁটে যেদিন তোমার বাসায় ঢুকলাম,দারোয়ানের কাছে জানতে পারলাম তুমি আর্কিটেকচার। এই আটতলা এ্যাপার্টমেন্ট তোমারই। প্রাডো আর মিতসুবিশি দুটো গাড়িই তোমার।

মেজাজ টা চড়ে গেলেও তোমায় কিছু বলতে পারি নি। কারণ,আমি হতবাক তোমার কৌশলে। লজ্জ্বা টা বেশি বলে হয়তো  মুখটা আজও খুলতে পারিনি।

প্রথমে পড়াতে বললে রাত আটটায়,দুদিন পর ন'টায়,আরও দুদিন পর দশটায়। কারণ,তোমার মেয়ে দশটার পর পড়তে বসতে চায় না। নিজের পড়া পড়ে,আরও কাজ করে তোমার বাসায় আসতে যেতে নয় কিলো পথ পাড়ি দিতে হতো।

আমি কি ছাত্র নই?আমি তোমায় বলা সত্ত্বেও রাজি হলেনা। আমাকে রাতেই যেতে হবে। পড়ানোর পরিমাণ বাড়াতে হবে,সময় বেশি দিতে হবে। কিন্তু তোমার অর্থ প্রদান বাড়েনি।

আমি পড়ানোর সময় তুমি পাশে এসে দাঁড়িয়ে থাকো। পাছে আমি পড়ানোয় ফাঁকি দেই। ঘর্মাক্ত ব্যাচেলর ছেলেটির শুকনো মুখ দেখেও তোমার ঘরে কখনো পানির দেখা পাই নি। নাস্তা তো রাজার খরচ।

কানের সামনে রেডিও বাজাও,আরো বেশি সময় দেন। সাবজেক্ট বেশি। হপ্তায় পারলে পাঁচদিন আসেন,পরীক্ষা নেন বারবার। প্রশ্ন প্রিন্ট করে দেন। সিস্টেম বদলান বারবার যাতে পড়ায় মনোযোগ বাড়ে সন্তানের। কিন্তু তোমার বেতন প্রদানের সিস্টেম বদলায় নি। লজ্জ্বায় বলতেও পারিনা। মধ্যবিত্ত ছেলেদের লজ্জ্বা বোধহয় একটু বেশি ই।

শুধু তুমি না। তোমার মত হাজারে এরকম আরো দু-চারজন আছে। তোমারই সতীর্থ একবার নিজের সন্তানকে পাঁচদিন ছুটিতে রেখেছিলো। আবার সেই পাঁচদিনের ছুটি দাবিতে অর্ধমাসের বেতন দিয়েছিলো। কোন যুক্তিতে এ কাজ,আমি হতভম্বতায় আজও বুঝিনি। লজ্জ্বায় মুখে বুলি ফোটাতে পারিনি। পকেটটা অর্ধহালকা অনুভবে রাস্তায় হেঁটেছিলাম দীর্ঘক্ষণ।

এই শহরে নামী-দামী প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের ভিড়ে টিউশনি পাওয়া খুব কঠিন। তারপরও টিউশনি খুঁজি। তুমিও কম টাকায় স্বার্থ হাসিলের জন্য আমার মত ছাত্রদের শিক্ষক হিসেবে রাখো।

শোনো অভিভাবক,কাকের ঘরে কাকই হয়,কোকিল হয় না। নিচু মানসিকতা বদলাও। কম খরচে সন্তানের ভালো রেজাল্ট আশা করা তোমার অন্যায়।
যে তোমার সন্তানকে পড়াচ্ছে,সে আমিও একজন ছাত্র। আমারও পড়াশোনা আছে,কাজ আছে,অন্য একটা রঙিন দুনিয়া আছে।

আমার মত হাজার ছাত্র নিজের জন্য তোমার মত হাজার অভিভাবকের সন্তানকে পড়াচ্ছে।

দয়া করে শিক্ষক নামক সেই ছাত্রের অসহায়ত্বের সুযোগ নিও না।

স্বপ্নের কালকথা


আমি ঘুমের মধ্যে মাঝে মাঝেই হঠাৎ চোখ মেলি। নাহ্,নিশি নয়। দিনে-দুপুরে কাউকে নিশিতে পায়না।

গত সাত বছর ধরে খুঁজছি কিছু। কেউ কেউ গল্পের মাঝটা জানে। আমিই ভুলে গেছি সর্বাংশের শুরুটা।

আজ হুমায়ূন আহমেদ স্যার এলেন। সাথে একজন অতিথি ছিলো। অতিথিটি আসলে তার না আমার,আমি জানিনা। মাসখানেক তার কোনো বই পড়িনি। সুতরাং,'প্রভাবয়িত স্বপ্ন' ঘটানোর সুযোগ নেই।

এসেই টেবিলের সামনে রাখা চেয়ার দুটোতে দুজন বসলেন। ঘরটা আমার কাছে অপরিচিত। স্কচ ট্যাপ আর কি একটা যেন চাইলেন। স্যারের ডায়েরি ছিড়ে গিয়েছে বোধহয়। আমি পাশের রুমে কি একটার জন্য আসতেই অতিথিকে ফিসফিসিয়ে বলতে শুনলাম,
- মুয়িদুল ছেলেটাকে আপনার কেমন লাগে?

- ব্যক্তিগতভাবে ভালোই লাগে,কিন্তু কখনো প্রকাশ করিনি।

আমি সামনে যেতেই আমাকে বললেন,
- "বিথিরোড" টা চেনো?

আমি নিঃশব্দে মাথা নাড়তেই বললেন,
- ওখানে লাশ ফেলা হয়। যদি চাও,যেতে পারো। সাইকেল নিয়ে যেও। যদিও দিনে লাশ দেখতে পাওয়া যায় না। রোড টা বেশ সুন্দর। ডায়েরিতে তোমার নাম্বার টা লেখো তো..

আমি আমার ফোন নাম্বার লিখতে গিয়ে কলম পাচ্ছিনা। স্যার একটা কলম দিলেন। সেটাতেও কালি আসছে না। যাও আসছে,আমি ডিজিট মনে করতে পারছি না। আমার সংখ্যাভীতি আছে। ২০০৯-১০ এর দিকে পলিনড্রেমিক নাম্বার নিয়ে একটু বেশি ঘাটাঘাটিতে আমার এই সমস্যার সৃষ্টি।

স্যার আমার দিকে তাকিয়ে হাসলেন। ওনার ফোন নম্বর আমাকে দিতে গিয়ে খেয়াল করলেন,ওনারও ডিজিট মনে পড়ছে না। চেয়ার ছেড়ে উঠতে উঠতে বললেন,
- রোডটার কথা মনে রেখো। স্বপ্ন তো,স্মৃতি না থাকার সম্ভাবনা বেশি।

বলতে বলতে হাওয়ায় মিলিয়ে গেলেন। আমি চোখের পাতা হঠাৎ খুলে দেখি,চোখের সামনে একটা রৌদ্রজ্জল সড়ক খা খা করছে। কিন্তু,তাতে কোনো লাশ নেই।

উদ্ভট স্বপ্ন দেখা সাধারণ মানুষের কর্তব্যে পড়ে। মস্তিস্ক আমাদের নিয়ে সর্বদা খেলে। আমরা বাস্তববাদী সাজার জন্য স্বপ্নের জগৎটাকে একপাশে ঠেলে রেখে দেই।

মনে আছে,২০১০ এর দিকে "টানিন" নামের এক জায়গায় গিয়ে ভরদুপুরে বসে থাকতাম। সেখানে খুন করে লাশ ফেলে রাখা হতো। এলাকাটা মরুময় আর ঘাসময় ছিলো। ডাকিনীবিদ্যা নিয়ে ঘাটাঘাটিতে ছিলাম আর টিনেজ বলে ব্যাপারটা বুঝিনি তখন। একদিন সে গল্পগুলো জমাবো নে।

২০০৮ এর দিকে সম্ভবত আমি স্বপ্ন দেখার সত্যিকার শক্তি টের পাই। তারপর থেকেই দৌড় শুরু। "কোয়ান্টাম পদার্থবিদ্যা" আর "কোয়ান্টাম মেথড" এর সংমিশ্রণে ঢুকি। পরবর্তীতে এক সংঘের মাধ্যমে পরিচয় হয় "প্যারাফিজিক্স" এর সাথে।

২০০৯ এর দিকে আমি "কল্পবাস্তব জগতে" পা রাখি। একা একাই। সাথে আরেকটা জগতে। ডাকিনীবিদ্যা।
প্রথমদিকে ক্ষমতার নেশায় শুরু করলেও পরে ফেরত আসা হয়। কিন্তু ঘাটাঘাটি চলতেই থাকে। মিশরীয় মিথে বিশ্বাসী আমি;যোগাযোগ হয় ইন্টারনেটে কিছু প্রতিষ্ঠানের সাথে। পরিচয় হয় ইন্ডিয়ান কিছু তান্ত্রিকের সাথে।

আমেরিকান কয়েকজন ভলান্টিয়ার্স ইন্টারনেটে আমাকে পরিচয় করায় তৃতীয় শক্তির জগতে।গবলিন,পাক,ঔগার,ইনকিউবাস,পিক্সি,গোগ্রান,ব্যানসী আরও শতও কতও নাম..!! পরিচিত তান্ত্রিকেরা আমায় শিখিয়েছিলো কিছু যুক্তির চিত্র যাতে পরাশক্তি ভর করতে পারে। বছরখানেক আগে চিত্রগুলো কোনো এক কারণে পুড়িয়ে ফেলতে হয়। আমার নব্বই শতাংশ লিখিত জ্ঞান পুড়িয়ে ফেলতে হয় আমাকে। এখন কয়েক টুকরো কাগজ আছে শুধু..!!

আমার সেলেনা আন্টির কথা বেশ মনে পড়ে যিনি আমায় বলেছিলেন,তিনি তার তিনমাসের ছেলে বাচ্চাটাকে তার পালা অজগর সাপকে খেতে দিবেন। "মিডিয়াম থ্রি" মানে "আত্মাভরবাদে" নিযুক্ত ছিলেন উনি। সেই টিনএজ বয়সে ইন্টারনেট সহজলভ্য ছিলো না। এক বছরের মাথায় সকল সংঘের সাথে যোগাযোগ হারাই আমি।

ক'দিন আগে ডেঙ্গুতে ছিলাম। দিনরাত শুধু ঘুম। স্বপ্নে দেখলাম,একটা তিনমাসের বাচ্চাকে অজগরের মুখের সামনে ছুড়ে ফেললো একদল ছেলে। দেয়ালের ওপারে বিশালদেহী এক মহিলা হাসছেন। সম্ভবত সেলেনা আন্টি।

মাঝের পাঁচ বছর শুধু ঘুরেছি আর পড়েছি। একসময় প্রিয়তমার খাতিরে একবছর নিষিদ্ধ করে রেখেছিলাম ঘাটাঘাটি। পরে দেখলাম,আমার জগৎ টা একদম আলাদা সব থেকে। আমি বের হলে পাপ হবে।
গুল মারা ভাবলেও মাঝে মাঝে আমি অবাক হয়ে যাই যে,না চাইতেই তৃতীয় শক্তি কোনভাবে আমার মধ্যে ঢুকে পড়েছিলো। ২০১৩ সালের দিকে কয়েকজন বান্ধবী বিষয়টা জানায় আমায়। টেলিপ্যাথি আর স্বপ্ন নিয়ন্ত্রণে তখন বিশ্বাসী হয় ওরা।

কোয়ান্টাম মেকানিক্স সবসময় আমায় সাপোর্ট দিয়েছিলো। সাথে ছিলো প্যারাফিজিক্স।

স্বপ্ন দেখা,যতটা জটিল ভাবা হয়,আমার কাছে তার থেকেও জটিল লাগে। ডাকিনীবিদ্যায় প্রবেশের আগে স্বপ্ন নিয়ন্ত্রণ নিয়েই ছিলাম। কয়েকটা শক্তি এখনও উল্টো আমায় নিয়ন্ত্রণ করে। এমনকি ক'দিন আগেও স্বপ্নের তৃতীয় শক্তিস্তরেও পৌঁছাতে পেরেছি নিজের অজান্তেই। "ক্যাথলাস" গল্পটা লেখার পরে।

আমার জীবনটা হাস্যকর। এমন এক জগতে ঢুকেছিলাম সাত বছর আগে,যার কোন ভিত্তি থাকলেও ভিত্তি নেই। ঐশ্বরিক শক্তি তার পাশে শয়তানিক শক্তি স্থান পেলেও আমি তৃতীয় কোনো শক্তিকে জানার জন্য দৌড়োচ্ছি। স্বপ্নের বিজ্ঞানভিত্তিক বিশ্লেষনের বাইরের যেসব শক্তিশালী বিশ্লেষণ আছে,সেসব না হয় আরেকদিন হবে।

আপাতত স্বপ্ন নয়,এমনকি কোনো ডাকিনীবিদ্যাও নয়; "মেজমেরিজম" নিয়ে কিছুটা পড়তে চাচ্ছি। পড়ায় মনযোগ আসছে না। বাইরে বোধহয় ঝড় শুরু হবে। গত সাত বছরের জ্ঞানগুলো দপদপ করে মাথায় জ্বলছে। এত বিষয় ঘাঁটা হয়েছে যে,মগজটাই ঘেঁটে গিয়েছে।

কে জানে,তৃতীয় শক্তি হয়তো পাশে বসেই আমায় দেখে হাসছে..!!

পোস্টটির দর্শক সংখ্যা-

ফিচার পোস্ট

দারুণ তিনটি টিনেজ মুভি

কৈশোরেতে প্রেমে না পড়লে বুড়ো বয়সে আপসোস করতে হয়। বয়ঃসন্ধির নতুন জগৎ,নতুন অনুভূতি,ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো পরবর্তীতে দারুণ স্মৃতি হয়ে আজীবন রয়ে যায়...

সর্বাধিক পঠিত